রমজান মাসে যে ৫টি কাজ অবশ্যই করণীয়


 রোজার প্রতিদান পুরোপুরি পেতে চাইলে অবশ্যই রোজার হক আদায় করে রোজা রাখতে হবে। রোজার হক আদায়ে যেসব করণীয়:
.
(১) মিথ্যা এবং মূর্খতা বর্জন করতে হবে। মেজাজের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা, সে অনুসারে কাজ করা এবং মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন নেই।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৬০৫৭]
.
‘মূর্খতা’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে, এ ব্যাপারে সহিহ বুখারির শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকার ইমাম ইবনু হাজার আসকালানি (রাহ.) বলেন, এর মানে হলো, চিৎকার-চেঁচামেচি করা, বোকার মতো কাজ করা। অর্থাৎ হৈ-হুল্লোড় করা, মূর্খের মতো আচরণ করা। সাধারণত মেজাজ হারালে আমরা এমন করি। রোজাদার সবর করবে, সংযমী হবে, এটিই নিয়ম।
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘রোজা জাহান্নামের আগুন থেকে ঢালস্বরূপ। তাই, যে ব্যক্তি রোজা রেখে ভোর করে, সে মূর্খতা দেখাবে না। অন্য কেউ যদি তার সাথে মূর্খের ন্যায় আচরণ করে, তবে সে তার সাথে অশ্লীল কথা বলবে না এবং গালি দেবে না। বরং সে যেন বলে, ‘‘আমি রোজাদার।’’ [ইমাম নাসায়ি, আস-সুনান: ২২৩৪; হাদিসটি সহিহ]
.
(২) অনর্থক ও অশ্লীল কথা বলা যাবে না।
.
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কেবল পানাহার থেকে বিরত থাকাই রোজা নয়। রোজা হলো, অনর্থক ও অশ্লীল কথা থেকে বিরত থাকা।’’ [ইমাম হাকিম, আল-মুসতাদরাক: ১৫৭০; শায়খ আলবানি, সহিহুত তারগিব: ১০৮২; হাদিসটি সহিহ]
.
(৩) গালি দেওয়া যাবে না, ঝগড়া করা যাবে না।
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘রোজা ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন রোজা পালনের দিন অশ্লীল কথা না বলে এবং চিৎকার-চেঁচামেচি না করে। কেউ যদি তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে লড়াই করতে চায়, তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি একজন রোজাদার মানুষ’।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৯০৪]
.
(৪) কামনা-বাসনা থেকে দূরে থাকতে হবে।
.
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘আদম সন্তানের প্রতিটি (ভালো) কাজের প্রতিদান ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়।’’ মহান আল্লাহ বলেন, “কিন্তু রোজা ব্যতীত। কেননা, এটি আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেবো। বান্দা আমার জন্যই তার কামনা-বাসনা এবং পানাহার থেকে বিরত থেকেছে।’’ [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৫৯৭]
.
(৫) এগুলোর পাশাপাশি গিবত ও পরচর্চা থেকে দূরে থাকতে হবে। চোখ এবং কানের হেফাজত করতে হবে। তাহলেই আমাদের রোজা পরিপূর্ণতা পাবে, ইনশাআল্লাহ।
.
রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত এলার্মিং একটি হাদিস হলো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘কতো রোজাদার আছে, যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া কিছুই জোটে না! (ইবাদতের জন্য) কতো রাত্রিজাগরণকারী আছে, যাদের রাতে জেগে থাকা ছাড়া আর কিছুই জোটে না!’’ [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ১৬৯০; হাদিসটি হাসান সহিহ]

Nusus থেকে নেওয়া

Sadikul Islam

"তথ্য-প্রযুক্তি" নিয়ে লেখালেখি করতে বেশি পছন্দ করি। তাই আমি উক্ত প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি করি। যাতে পাঠকরা আমার লেখা সম্পূর্ণ পড়ে বুঝতে পারে। আপনাদের দোয়ায় আমাকে সামিল রাখবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন